মসজিদ নির্মাণ

মেহরাব’র রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ

মসজিদ নির্মাণ নিঃসন্দেহে ভালো কাজ,ইবাদাত।বর্তমান সরকার ২০১৪ ’র নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী সারা দেশে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ১৭০ টি মসজিদের কাজ প্রায় শেষ,উদ্বোধন হবে মুজিব বর্ষেই!

মডেল মসজিদ


বাহ কি চমৎকার❗যেমন কথা তেমন কাজ।

কিন্তু কেন জানি দেখতে পারছি- স্রোতের পানি বিপরীতে প্রবাহিত হচ্ছে।ভবিষ্যতের স্বপ্ন-আশা না করে অতীত ইতিহাস মনে পড়ছে।অনেকে এটাকে আমার ফোবিয়া বললেও,আমি ঠিক মানতে পারছি না।মানতে পারছি না এত মহৎ কাজের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রটাকেও।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা!
আমাদের কওমি জননী, মানবতার মা, গণতন্ত্রের মানসকন্যা,সর্বশেষ মাদার অব মাফিয়া❗

এরপরও আমার ভাবনা,আমাকে অন্যদিকে ধাবিত করছে।অামি ভাবতে বাধ্য হচ্ছি বৃটিশ রাণী ভিক্টোরিয়ার কথা।দেখতে পারছি- রাজনীতির পুরাতন সমীকরণ নতুন মোড়কে উপস্থাপনের ঘৃণ্য চক্রান্ত।
ভারতবর্ষে বৃটিশ শাসন স্থায়ী করার উদ্দেশ্য রাণী ভিক্টোরিয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেন।তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য( যা অদ্যবধী বিদ্যমান) হচ্ছে – মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু অনুগত শ্রেণির মোল্লা তৈরি।
এই কাজে গায়রে মুকাল্লিদ সম্প্রদায় দাড়িয়ে যায় বৃটিশ সরকারের পিছনে।প্রতিনিধিত্ব করেন-

মুহাম্মাদ হুসাইন বাটালবী
মওলভী আব্দুল হক বেনারসী
আবু সাইদ মুহাম্মাদ লাহোরি।
সরকারী ভাবে নাম করন করে নেয় “আহলে হাদিস”।

“আল ইকতিসাদ ফি মাসায়িলিল জিহাদ”- নামে একটা বই রচনা করেন মুহাম্মাদ হুসাইন বাটালবী। সেখানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম বলে উল্লেখ করেন তিনি।ইংরেজ শাসনে থাকা মানে ইসলামের পতাকা তলে থাকা,এরকম ফতোয়াও দরবারি মোল্লারা দিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত এই সম্প্রদায় কি ধরনের কথা বলে,কার পক্ষে কি কাজ করে – আশা করি সচেতন পাঠকের অজানা নয়।

এই ফরমুলা দারুন ভাবে কাজে লাগে।একটা জীবন্ত গাছ কেটে দুইটা ভাগ হয়ে যায় – ফলাফল “মৃত”।বৃটিশ চলে গেছে প্রায় ৭৫ বছর হলো,কিন্তু বাঙালি মুসলমান এই ধাক্কা আজও সামলাইতে পারে নি।সম্ভব হয়নি কেটে যাওয়া গাছটি জোড়া লাগা।ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য এবং দীর্ঘদিন প্রভাব বজায় রাখার জন্য এটা একটা অনন্য অস্ত্র!

এই অস্ত্র হাত ছাড়া করাে মতো ব্যক্তি আমাদের জননী নন।তিনি একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবীদ।প্রতিটি কথার যিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেন,তিনি এতবড় পাবলিক সেন্টিমেন্ট বুঝবেন না- তা কখনো হতে পারে❗
মেহরাবের ইতিহাস তিনি জানেন না,তা কিভাবে হয়?
মেহরাবের ক্ষমতা কি? তা তিনি প্রয়োগ করবেন না,তা কি হতে পারে!

৫৬০ টি মসজিদ,৫৬০ টি মেহরাব,৫৬০ টি সরকারি মোল্লা- একটা মাসআলা(সরকারি)!

চিন্তা করুন!

ইসলাম পন্থীরা আজীবন চেষ্টা করেও এতোটা ঐক্যে পৌঁছাতে পারবে কি না,প্রশ্নের বিষয়❓

THINK ABOUT IT

মুসলিম,
তুমি যতক্ষণ ভিক্ষুকের মত ভিক্ষা করবে
ততক্ষণ তুমি সহনীয়,
যখন তোমার অধিকারের জন্য সংগ্রাম করবে,
তখন তুমি জঙ্গি(তথাকথিত)❗

সরকারি মোল্লাদের কটাক্ষ করে “দরকারী মোল্লা” দের প্লাটফর্ম তৈরি করুর।ঐক্যের গান গাওয়া বন্ধ করুন,ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান।সুর পাল্টান,স্বর তুলুন।মাঝে মাঝে হুংকার দিয়ে নেতিয়ে না পড়ে – ধীরে ধীরে স্বরকে উচু করুন।বিশৃঙ্খল নয়,শৃঙ্খল কর্মসূচী প্রনয়ন করে ধারাবাহিক সংগ্রামের মাধ্যমে – তথাকথিত নয় প্রকৃত জঙ্গি(যোদ্ধা /মুজাহিদ) হয়ে উঠুন।

Sayeed Muhammad Sanower

মসজিদ নির্মাণ VS ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ

শেখ হাসিনা- মোদি’র রাজনীতির সরল সমীকরণ

(বাবরি মসজিদ’র পর “জ্ঞানবাপি” মসজিদের পালা)

১৫২৮-২৯ সালে অাধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী ন্যায় পরায়ন মুঘল সম্রাট বাবরের আমলে নির্মিত অযোধ্যার বিখ্যাত বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে মুসলমানদের কলিজা যে দিখন্ডিত করেছিল,তার ব্যথা কমতে না কমতেই আবার আঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে চরম উগ্রবাদী, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী,মুসলমানদের রক্ত পিপাশু বিজেপি সরকারের লেজ কাটা মানুষরূপি হায়েনার দল।

কসাই নরেন্দ্র মোদির সংসদীয় কেন্দ্র ভারতের বারাণসী( কাশী) তে ১৬৬৪ সাল থেকে গর্বের সাথে স্বমহিমায় মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে বিখ্যাত “জ্ঞানবাপি মসজিদ”। আরেক মুঘল সম্রাট হাফেজে কুরআন জিন্দপীর বাদশা আওরঙ্গজেব ওরফে বাদশা আলমগীর “জ্ঞানবাপির মসজিদ” নির্মাণ করেন।দুই গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটির মিনারের উচ্চতা প্রায় ৭২ মিটার।

জ্ঞানবাপি মসজিদ


চরম উগ্রবাদী সম্প্রদায়ের দাবী – বাদশা আওরঙ্গজেব তাদের মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ নির্মাণ করেছেন।অথচ মসজিদের গা ঘেষে এখনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সংকেত দিয়ে যাচ্ছে ” কাশী বিশ্বনাথ মন্দির”।
তাদের দাবী অনুযায়ী ১৯৯১ সালে করা পিটিশনের হিয়ারিং এ গত ৮ই এপ্রিল সরকারের গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ আদালত দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগকে নির্দেশ দেয়, তাদের দাবী খতিয়ে দেখার জন্য- মন্দিরের জায়গায় মসজিদ হয়েছে কিনা! আশ্চর্যের বিষয় হলো এই প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ (ASI) অনেক আগে থেকেই সাম্প্রদায়িক দোষে দুষ্ট,প্রশ্নবিদ্ধ।
১৯৯২ এ এদের সেই ষড়যন্ত্রের ইতিহাস আমরা আজও ভুলতে পারি নি।ভুলতে পারি অযোধ্যার মাটিতে বয়ে যাওয়া ২০০০ হাজার মর্দে মুজাহিদদের রক্তের দাগ। ১৯৯২ সালের ৬ ই ডিসেম্বর এক কালো অধ্যায় রচনা করে “বিশ্ব হিন্দু পরিষদ”। ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় প্রায় ৪০০ বছরের অধিক পুরোনো “বাবরি মসজিদ”।
আগুন জ্বলে যায় মুজাহিদদের বুকে।জিহাদের নেশায়- আল্লাহর ঘরকে জালেমদের থেকে রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে মুসলিম জনতা।চরম সাম্প্রদায়িক উগ্র হিন্দুত্বগোষ্ঠির সাথে শুরু হয় দাঙ্গা!
প্রাণ হারায়! শহিদ হয় আমার ভায়েরা! মামলা হয়- মামলা চলে দীর্ঘ প্রায় ২৮ টি বৎসর!
কিন্তু কি পেলাম❓
২০২০ এর ৩০শে সেপ্টেম্বর! মুসলমানদের সাথে খেলা হলো আরেক বঞ্চনার খেলা।নিরস্ত্র মুসলমানদের উপর যারা ঝাপিয়ে পড়ল – মুক্তি দিয়ে দেয়া হলো তাদের সবাইকে।
মুসলমানদের রক্ত পান করে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে-
বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানী!
মন্ত্রী কল্যাণ সিং!
মুরলিনোহর যোশী- সহ অভিযুক্ত ৩২ জন হায়েনা কমান্ডার❗
আদালতের দেয়া নির্দেশে সম্পুর্ণ ভেঙে ফেলা হলো বাবরি মসজিদ!
গড়ে তোলা হলো মন্দির!
রক্তের দাগ এখনো জ্বলজ্বল করছে!
শহিদদের অার্তনাদ এখনো ভাসছে!

কিন্তু এই ঘটনার ঠিক কিছুটা আংশিক বিপরীত কাজ লক্ষ্য করছি বিজেপি সরকারের দালাল আমাদের বর্তমান সরকারের।তারা মসজিদ নির্মাণ করছে! সারা দেশে সরকারি অর্থে ৫৬০ টি মসজিদ হবে!

বাংলাদেশের মডেল মসজিদ vs ভাঙা বাবরি মসজিদ

কিন্তু সচেতন মানুষের মনে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে-
সম্পুর্ণ বিপরীত ধর্মী কাজ হওয়া সত্বেও, তাদের মাঝে এ চামচামির সম্পর্ক কিভাবে টিকে অাছে⁉️

ভেবে দেখেছেন কখনো?
দাদা বাবুরে খুশি করার জন্য তো বেশি বেশি মন্দির তৈরি দরকার ছিল, তা যদি আরও হয় মসজিদ ভেঙ্গে – তাহলে তো কোনো কথাই নেই।

But it’s call রাজনীতি ❗

আমরা ইসলাম পন্থীরা ঠিক এইটাই বুঝি না- গণ মানুষের সেন্টিমেন্ট!
সেটা মানুষ মেরে হলেও!

দাদা বাবুর মন্দির নির্মাণ আর আম্মাজানের মসজিদ নির্মাণ- লক্ষ্য উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন।
সংখ্যা গরিষ্ঠের মন যোগানো।

বাংলাদেশের কিছু নামধারী “অাকবরী আমলের উত্তরসূরী” আলেম যেমন আওয়ামী লীগ সরকারকে ইসলামি সরকার ভেবে ভুল করছে, ঠিক তেমনি কিছু সহজ সরল এদেশীয়- ওদেশীয় হিন্দু ভায়েরা চরম উগ্রবাদী বিজেপি সরকার কে হিন্দুদের সরকার ভেবে ভুল করছে। তারা আসলে কারোই না,তারা ক্ষমতার লোভি।ক্ষমতার জন্য নিজের ভাইয়ের গলায় ছুড়ি চালিয়ে সেন্টিমেন্ট আদায় করবে।

এদের জনবিরোধী কাজে যেমন চুপ থাকতে নেই,তেমনি তথাকথিত জনকল্যাণমুলক কাজের ভিতরের রাজনীতি না খুজে খুশি হওয়ারও কিছু নেই।

এদের রাজনীতি বুঝতে হবে,প্রতিহত করতে হবে,প্রতিরক্ষার সুস্থিত ঢাল তৈরি করতে হবে।

হতাশার ব্যাপার হলো -“আলকুফ্ রু মিল্লাতুল ওয়াহিদা”।

আর আশার আলো হচ্ছে -“নাসরুম মিনাল্লহি ওয়া ফাতহুন কারীব,ওয়া বাশশিরিল মু’মিনিন”।

শিল্পীর হাতে আঁকা ‘জ্ঞানবাপি মসজিদ’

Sayeed Muhammad Sanower

“পহেলা বৈশাখ” – সাংস্কৃতিক দন্ডেইতিহাস পরিক্রমা

‘বাঙালি মুসলমান’ নাকি ‘মুসলমান বাঙালি!’

অপসংস্কৃতি কে ‘না’ বলুন

পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ! ঢাক-ঢোল পিটিয়ে একদল পালন করলেও আর একদল এ থেকে অনেক দুরেই থাকে,হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির চর্চা বলে একটু অাড় চোখেই দেখে। জানি না,তারা ইতিহাস কোনটা জানে- সবাই যেটা জানে সেইটা নাকি ঢেকে রাখাটা! যেইটাই জানুক,আজকে আমার দালালিটা তাদের ভিত্তিকে যেমন মজবুত করবে,তেমনি চিন্তাশীলদের জন্য যোগাবে চিন্তার খোরাক।

পহেলা বৈশাখ নিয়ে মোটামুটি দুই ধরনের ইতিহাস থাকলেও আমাদের বাজারে একটাই ভালো চলে,আরেকটা উল্টিয়ে রাখা হয়েছে।
মুঘল আমলে কৃষকদের কাছ থেকে খাজনা ট্যাক্স আদায়ের জন্য আরবি নববর্ষের হিসাব অনুযায়ী আদায় করা হতো।একদল জ্ঞানপাপী ঐতিহাসিক এখানে ইতিহাসটাকে একটু রং লাগিয়ে তুলে ধরেন- আরবি কোনো কোনো মাসে একদিন কম হওয়ায় বছরে ১০-১২ দিন পার্থক্য তৈরি হয়।এই পার্থক্যের কারনে ফসলি জমির খাজনা আদায়ে বিঘ্ন ঘটে। তাই বাংলা সনের প্রবর্তন করা হয়।এই তথাকথিত মহৎ কাজটি যিনি করেন,তিনি মহামতি আকবর।
হ্যাঁ,ইনিই সেই মুঘল সম্রাট, যিনি ‘আল্লাহ আকবার’- এর অর্থ করেছিলেন “আকবর-ই আল্লাহ” (নাউজুবিল্লাহ)।
যিনি একাধারে শেষ নবী এবং ইমাম মাহদী দাবীকারী! আর হ্যাঁ,এই মহামতি একটা ধর্মও তৈরি করেন- “দ্বীন ই এলাহী”।
তার কালিমা ছিল-” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আকবর খলিফাতুল্লাহ।”
এই ধর্মের সালাম- ” আল্লাহু আকবর” মানে
আকবরই আল্লাহ।

১৫৮২ সালে আকবর নিজেকে খোদা দাবী করে এই ধর্ম তৈরি করেন, যাতে ইসলামী শরিয়তের প্রত্যেকটি বিধানের বিপরীত অাইন চালু করেন।আর তার এই ধর্মের কলকব্জা নাড়ত হিন্দু জ্যোতিষ শাস্ত্রের পন্ডিতরা।আকবর অনেক ছোট বেলায় সিংহাসনে বসার পর থেকেই সংখ্যাধীক জনগোষ্ঠী হিন্দুদের মন রাখার চেষ্টা করত-যাতে তার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।
তবে দুঃখের বিষয় হলো তার ধর্মের অনুসারী ছিলেন মাত্র ১৮ জন মতান্তরে ২০ জন।
হয়ত পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র এবং প্রভাবশালী ধর্ম দ্বীন-ই এলাহী( যার প্রভাব এখনো বর্তমান এবং তৈরি হয়েছে না বলা অনেক অনুসারী)!

( আকবরের ধর্মের প্রভাব যে বর্তমান সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করছে – এ বিষয়ে বিস্তারিত অন্য পোস্টে খুব তাড়াতাড়ি পরিস্কার করব,ইনশাআল্লাহ)

তার এই ধর্ম অনুসারে চাঁদের হিসাবে খাজনা অাদায়ে তিনি রাজি নন,কারন এতে ইসলাম ধর্মের সংশ্লিষ্টতা চলে অাসে।তাই কি করা যায়, এ বিষয়ে সভাসদের পন্ডিতদের কাছে পরামর্শ চাইলেন।জ্যোতিষিরা প্রস্তাব দিলেন নতুন সাল গণনার।প্রস্তাব স্ব- সম্মানে গৃহীত হইল।১৮৮৪ সালে তৈরি হয়ে গেল ১২ মাসের নাম,হিন্দু জ্যোতিষ শাস্ত্রের ১২ নক্ষত্রের নামে!
বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ, জায়ীস্থা থেকে জ্যৈষ্ঠ, পূর্বাষাঢ়া এবং উত্তরাষাঢ়া থেকে আষাঢ়, শ্রাবণী থেকে শ্রাবণ,পূর্ব এবং উত্তর ভদ্রপদ থেকে ভাদ্র, আশ্বায়িনী থেকে আশ্বিন, কার্তিকা থেকে কার্তিক, আগ্রায়হন থেকে অগ্রহায়ণ, পউস্যা থেকে পৌষ,পূর্ব এবং উত্তর ফাল্গুনী থেকে ফাল্গুন এবং চিত্রা নক্ষত্র থেকে চৈত্র।
প্রত্যেক বৈশাখ মাসের প্রথম দিন আকবর খাজনা আদায় করত।

(বিঃদ্রঃ বাংলা সন গণনা সপ্তম শতাব্দীতে রাজা শশাঙ্ক শুরু করেন,আর আকবর মাসের নাম দিয়ে পরিপুর্ণতা আনেন।)

কি আশ্চর্য, তাই না!
তৈরি হলো একটা ধর্মের প্রয়োজনে আরেকটা ধর্মের সহযোগিতায়- আর আজকে সেটাকে একটা বৃহত্তর জাতির ইতিহাস বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে!
★যদি ধরেও নেই,এটা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি না,তাহলে ভালো ভাবে খেলায় করুন- দ্বীন ই এলাহী চালু হয় ১৫৮২ সালে আর বাংলা সন চালু করা হয় ১৫৮৪ সালে,যখন দ্বীন ই এলাহী ধর্মের প্রচারকার্য চলছে,চলছে আকবর কে আল্লাহ বানানোর আইন!
তারই একটি মিশন বাংলা সন।
এই দিক থেকেও এটা মুসলমানের জন্য মানা কতটা যুক্তিযুক্ত – তা পাঠকের বিচার্য।

চমকে উঠলেন হয়ত এই ইতিহাস দেখে,এই ইতিহাসটাই বাজারে উল্টিয়ে রেখে সুকৌশলে মুসলমান থেকে মুশরিক বানানোর পায়তারা চলছে।

এতো গেল ইতিহাস!

এবার চলুন জেনে নেয়া যাক,পহেলা বৈশাখ উৎযাপনের কিছু রীতিনীতি।

★প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় ১৯১৭ সালে এবং দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের প্রাক্কালে ১৯৩৮ সালে যখন এশিয়ায় কিছু খন্ড খন্ড সংঘর্ষ হচ্ছিল, তখন আমাদের এদেশীয়-ওদেশীয় হিন্দু ব্রাহ্মণরা পহেলা বৈশাখের দিনে “বৃটিশদের জয়ের” জন্য হোম,পূজা ও কির্তনের ব্যবস্থা করে।
(এই তথ্য আশা করি সচেতন পাঠকদের, বৃটিশ খেদানোর ইতিহাসে নতুন ভাবনার উদ্রেগ হবে।কারা সংগ্রাম করেছিল বৃটিশদের বিপক্ষে – হিন্দু নাকি ইতিহাসে উপেক্ষিত মুসলমানরা?জানতে হবে নিজেদের ইতিহাস❗জানতে হবে গৌরবের সোনালী অধ্যায়!)

→হোম, যোজ্ঞ কি কখনো অসাম্প্রদায়িক পহেলা বৈশাখের নমুনা হতে পারে?
প্রশ্ন রেখে গেলাম পাঠকদের কাছে।

★১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের “মঙ্গল শোভাযাত্রায়” ব্যবহৃত মুর্তি,ভাষ্কর্য,বিভিন্ন প্রাণীর চিত্রিত ছবি- কোন ধর্মের প্রতিক,আশা করি তা অজানা নয়।
তাহলে কেন তা ঢালাওভাবে বাঙালিদের নামে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে?

★বউমেলা- ইশাখাঁর সোনারগাঁওয়ে বর্তমান নারায়ণগঞ্জে প্রায় চারশো বছরের পুরোনো বটগাছের নিচে পহেলা বৈশাখকে ঘিরে বসে “বউমেলা”।পাঁচদিন ব্যাপি চলা এই মেলা শুরু হয় সিদ্বেশ্বরী দেবীর পুজার মাধ্যমে। স্বামীর সোহাগিনী হতেই হিন্দু রমনীরা ছুটে আসেন এই পুজোয়।

→হিন্দু সমাজের এই বহুল প্রতিক্ষিত পহেলা বৈশাখকে কেন চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতি হিসবে??

নাকি মুসলমানদের পাকিস্তানি তকমা লাগিয়ে বাঙালি থেকে বাদ দেয়ার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের অারেক নাম এই পহেলা বৈশাখ???

★ নারায়ণগঞ্জে আরেকটি মেলার আয়োজন করা হয় যার নাম ঘোড়ার মেলা।যামিনী সাধক নামের এক পুরোহিত পহেলা বৈশাখের দিনে ঘোড়ায় চড়ে এসে সবাইকে পুজার প্রসাদ বিতরণ করতেন।তিনি মারা যাওয়ার পর হিন্দুধর্মাবলম্বীরা সোনারগাঁও থানার পেরাব গ্রামে তার স্মৃতি স্তম্ভ বানায় যেখানে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখের দিনে ঘোড়ার মুর্তি রাখা হতো।কালক্রমে সেখানে এখন মেলার আয়োজন করা হয়।তথাকথিত বাঙালিরা মেলার যায়,ঘোড়াফেরা করে ক্লান্ত হলে তাদের শ্রান্তির জন্য ব্যবস্থা করা হয় “কির্তন” এর।

→এ কোন বাঙালির ঐতিহ্য?
→প্রশ্ন জাগে, যে মুসলমানদের সন্তানরা পহেলা বৈশাখকে বাঙালির ঐতিহ্য বলে চালিয়ে দেয়, তাদের কোন সংস্কৃতিতে পূজা,কির্তন,যোজ্ঞ আর প্রসাদ বিতরণ হয়???

★★পান্তা ভাত আর ইলিশ খেয়ে যদি আপনি বাঙালিআনা দেখাইতে চান,তাহলে প্রশ্ন এসে যায়- ” আপনি বাঙালি মুসলমান নাকি মুসলমান বাঙালি❓”
পবিত্র মাহে রমজানুল মোবারক আর পহেলা বৈশাখ একসাথে আপনার দোড়গোড়ায় দাড়িয়ে!
আপনি কাকে ফিরিয়ে দিবেন?

আপনি আগে বাঙালি পরে মুসলমান নাকি আগে মুসলমান পরে বাঙালি??
এই প্রশ্নেরও উত্তর আপনার জিম্মায়!

পান্তা ভাত আর ইলিশ যদি হয় মাহে রমজানের সকালের বাঙালিআনা,
সেতো রাজা শশাঙ্কের ধর্মের অনুসারীর হবে!
হবে আকবরের দ্বীন- ই এলাহী ধর্মের ধর্মের অনুসারীর!

It’s a great challenge for you!

এবারের মাহে রমজান, সাধারণ কোনো রমজান নয়।এখানে অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা শিক্ষা আছে! আছে বহুদিনের ঘুম্রজালে পেঁচানো প্রশ্নের উত্তর-
•আমি কি বাঙালি মুসলমান??
•নাকি আমি মুসলমান বাঙালি???
•বাঙালি সংস্কৃতি বলে যেটাকে উগলে দেয়া হচ্ছে – তা আসলে কোন সংস্কৃতি?
•আমার বাঙালি সংস্কৃতি কোথায় হারিয়ে গেল?
•কেনই বা একটা ধর্মের ধর্মীয় সংস্কৃতিকে বাঙালি সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দেয়ার এতো জোর পায়চারা?
•আর যাদের সংস্কৃতি অন্য নামে চালানোর অপচেষ্টা চলছে,তারাই বা চুপ কেন?

খুজতে হবে এসব প্রশ্নের উত্তর,ভাবতে হবে, ভাবাতে হবে!
আমি একজন মুসলিম হিসেবে, বাংলাদেশের বাঙালি হিসেবে, এদেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ ধর্মীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে এই পহেলা বৈশাখে আমার দায়িত্ব –

• আমার প্রতিবেশী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের ধর্মীয় উৎসব “পহেলা বৈশাখ” পালন করতে পারে, সে দিকে যথাসম্ভব সতর্ক দৃষ্টি রাখা।

•আকবরের উত্তরসূরী দ্বীন-ই এলাহীর অনুসারীদের চিহ্নিত করে রাখা!

Sayeed Muhammad Sanower

“খুনি মা’র হাতে ইতিহাসের . পুনরাবৃত্তি!”

২০১৩-‘২১ কিছু ঘটনাপ্রবাহ ও আমাদের শিক্ষা

আমাদের প্রাপ্তি

রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত।তথাকথিত যুদ্ধাপরধীদের বিচার,শাহবাগে নাচা-নাচির মহড়া,অনলাইনে ইসলাম, রাসুল সাঃ ও আলেমদের নিয়ে উলঙ্গ বেহায়াপনা!  এর মধ্যেই হেফাজতের কর্মসূচী ঘোষণা(অনেকের ভাষায় আচমকা)- ৫ই মে শাপলা চত্বরে বিক্ষোভ- নাস্তিক ব্লগার ও ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে।
এই কর্মসূচী নিঃসন্দেহে ওদের চেতনায় অাগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।সেই অগ্নি স্ফূলিঙ্গই প্রকট হলো সেদিনের জনস্রোতে।
প্রায় অর্ধযুগের কিছু কম সময়  ধরে গড়ে তোলা রাষ্ট্রযন্ত্র বহনকারী, লেবাসধারী সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেয়া হলো বিক্ষুব্ধ জনতার উপর।মরিচা ধরা রাষ্ট্রযন্ত্রের সেদিনের পরীক্ষায় – কতজন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করল, তাই নিয়ে শুরু হলো রাজনীতি।
১২,১৫,৫৮,৬৮ বনাম হাজার হাজার!! তার সঠিক ইতিহাস কিন্তু আমরা আজও পেলাম না।

সময় পরিবর্তন হচ্ছিল, সাথে কিছু সম্পর্কও।সরকার তাদের কে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করছিল।এতটুকু প্রমাণ করতে,”তিনি ইসলাম বিদ্বেষী নন!” কারণ কিছু ইসলামী জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বকে তখন সরকারি সেবায় রাখা হয়েছিল,এটা জনগণ গ্রহণ করতে পারছিল না। তাই সম্পর্কটা অনেকটাই মাথায় “পট্টি” বাধার মতো রাজনীতিতে রুপান্তর হয়।কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা বুঝতে পারি নি।
সম্পর্ক যে গভীর হয়েছে তা প্রমাণ করতে সরকার কিছু সমালোচিত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন। ইসলামি দলগুলোর দীর্ঘদিন আন্দোলনের পরে পাঠ্য বইয়ে কিঞ্চিৎ পরিবর্তন এনে জালেমদের সাথে আলেমদেরও মন রাখলেন।
আল-হাইআতুল উলইয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র সুদীর্ঘ দিনের দাবীকে মেনে নিয়ে দাওরায়ে হাদিস কে স্নাতকোত্তর সম্মান দিয়ে আইন করা হয়।
২০১৮ সালের ৪ঠা নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেদিনের সেই শোকরানা মাহফিলে উপস্থিত কওমী জন সমুদ্রের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে
মুফতি রুহুল আমিন “কওমী জননী”- বলে পরিচয় করে দেন।

মাতৃহারা কওমি সন্তানরা ফিরে পেল তাদের মা!
ভাই হারা জাতি ভাইরা- ফিলে পেল তাদের মা!
আমরা ফিরে পেলাম আমাদের মা!

সর্বোচ্চ আদালতের সামনের গ্রিক মূর্তি সরানো, সদ্য মূর্তি বিরোধী আন্দোলন সহ সরকারের(প্রধানমন্ত্রীর) অবস্থান ছিল রহস্যজনক- জালেমদের সাথে আলেমদেরও মন রাখার চেষ্টা!

দীর্ঘদিনের এই রাজনীতি স্বমহিমায় আত্মপ্রকাশ করল একাধারে বায়তুল মোকাররমে,হাটহাজারিতে,বি বাড়িয়াসহ বিভিন্ন জায়গায়। জনস্রোতে চলল আরো একবার রাষ্ট্রযন্ত্রের পরীক্ষা।
রক্তে রঞ্জিত হলো বায়তুল মোকাররম! রাজপথ পিচ্ছিল হলো হাটহাজারীর ছাত্র-জনতার রক্তে! আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হলো বি বাড়িয়ায় প্রকৃত শহিদ জননীর আর্ত চিৎকারে! সারা দেশে বয়ে গেল রক্তের বন্যা- ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে❗

মুসলিম বিদ্বেষী কসাই সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর- শুরু থেকেই আলেম ওলামাদের সাথে সাধারন দেশ প্রেমিক জনতা মেনে নিতে পারছিল না।বাম ধারার কিছু ছাত্র সংগঠনের পাশাপাশি সাধারন মানুষের নেতৃত্বে ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে ছিল তথাকথিত অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।কঠিন হুমকি, হুসিয়ারী সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে আওয়াজ নিচু হয়ে যায় অনেকের।যেটাকে সমালোচকরা নেতিবাচক ভাবে দেখলোও অনেকে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা মনে করছিল।

কিন্তু হঠাৎ ২৬ শে মার্চের বিক্ষোভে যা হলো,তার জন্য হয়ত কেউ প্রস্তুত ছিল না।
২৬,২৭,২৮ শে মার্চের কর্মসূচীতে কওমী জননীর রাষ্ট্রীয় বৈধ-অবৈধ বাহিনীর হাতে শহিদের স্তুপ তৈরি হলো। প্রাণ হারালো ১৭/১৮ জন।
বন্ধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম,হরতাল, বিক্ষোভ, কর্মসূচী! সব শেষ!

এখন আমাদের করনীয় কি?
কি পেলাম আমরা?
আমাদের “জননী” আমাদের কি উপহার দিলো?
সেই হিসাব এখনো মিলছে না!

তবে এতটুকু আমাদের শিখে রাখা দরকার-
১.তাগুত কখনো ইমানদারের বন্ধু হতে পারে না,ইতিহাস সাক্ষী।
২. তাগুতের সাথে কোনো মুল্যেই সমঝোতা নয়।
৩. মিষ্টি কথার ফুলঝুরি,আর সামান্য সার্থের দিকে তাকিয়ে ভবিষ্যতের বিরাট পরিকল্পনা জলাঞ্জলি দেয়া বিচক্ষন রাজনীতিবীদের সিদ্ধান্ত হতে পারে না।
৪. অতিতের ইতিহাস কে ভুলে শত্রুর সাথে গলায় গলা জড়ালে, অদূর ভবিষ্যতে ঘাড়ের উপর মাথাটা খুঁজে পাওয়া যাবে না!

সেই সাথে আমার অজ্ঞ মস্তিষ্কে বিজ্ঞ রাজনীতিবীদদের জন্য কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। জানি, তা হয়তো পৌছাবে না তাদের কাছ পর্যন্ত।

কিন্তু একজন সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে, একজন আনুগত্যশীল কর্মী হিসেবে,একজন শহিদী তামান্না লালনকারী হিসেবে আপনারও জানা দরকার মনেকরি এই প্রশ্নগুলো।

১.খুনিদের বিচার কি অাবাও আল্লাহর জন্যই রেখে হবে?
২. শহিদদের মর্যাদার জন্য কি কিয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে?
৩.শহিদদের তালিকা কি চুড়ান্ত হয়েছে? আহতদের তালিকা কি হবে না?
৪. জাতিকে কি আবারও ভবিষ্যতে অশরীরী সমঝোতার(তথাকথিত) মুখোমুখি হতে হবে??

Sayeed Muhammad Sanower

ফাউন্টেনপেন বা ঝর্ণা কলম

ঝর্ণা কলম বা ফাউন্টেন পেন এমন এক বিশেষ ধরনের কলম যাতে তরল কালি বিশেষ প্রকোষ্ঠে সঞ্চিত থাকে। বিশেষ প্রকোষ্ঠটির সাথে একটি সরু পথ দিয়ে কলমের নিবটি যুক্ত থাকে এবং মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে ওই পথ ধরে আসা কালি দিয়ে লেখা সম্ভব হয়। বিশেষ প্রকোষ্ঠটিতে সিরিঞ্জের মাধ্যমে বাইরে থেকে কালি ভরা যায়। এছাড়া কলমের অভ্যন্তরীণ চোষণ কৌশলের মাধ্যমে বোতল থেকে কালি চুষে নেওয়া যায়। এছাড়া কালি ভর্তি প্রকোষ্ঠ আলাদাভাবে বিক্রি করা হয়। ঝর্ণা কলম দিয়ে লিখতে তেমন কোন চাপ প্রয়োগ করা লাগে না, খুব সহজে আলতো চাপে এতে লেখা সম্ভব হয়।

বিশ্বের প্রথম ঝর্ণা কলম আবিষ্কৃত হয় ৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে, মিশরে। মিশরের সম্রাট মা’দ আল-মুয়িজ এমন একটি কলম এর কথা চিন্তা করলেন যা হাত এবং কাপড় কালিতে নষ্ট করবে না। আবিষ্কৃত এই কলমে আধুনিক কলমের মত কালি জমা থাকতো এবং মাধ্যাকর্ষণ বলের সাহায্যে সূক্ষ্ম নল চুয়ে কালি বের হতো। কাদি আল-নুমান আল তামিমি (৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ) এবং কিতাব লিস ওয়া ই-মুসাইয়ার্দ -তে এর বিশদ বর্ণনা রয়েছে।অনেকে মনে করেন ফাউন্টেন পেনের বাংলা তরজমা ঝর্ণা কলম নামটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দিয়েছেন।

ঝর্ণা কলম

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ! ‘বিকল্প কি?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ! ‘বিকল্প কি?

একবিংশ শতাব্দীর একদশক শেষ হওয়ার পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে।বিশেষ করে ফেসবুক -যা সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে সেলিব্রেটি পর্যন্ত একক অাধিপত্য বিস্তার করে অাছে।বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭৯ কোটি যা গত বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি।এর তুলনায় অনান্য মাধ্যম গুলোর খুব সামান্যই ব্যবহারকারী বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে মানুষ তুলে ধরছে তার প্রতিটি মুহূর্তের অাপডেট।ফলে এটা একদিকে যেমন যোগাযোগের অনন্য মাধ্যম , অন্য দিকে নিজের অনুভূতি-মতামত প্রকাশেরও মাধ্যম। এখানে তুলে ধরা হচ্ছে দেশের প্রতিটি প্রেক্ষাপট।পারিবারিক সমস্যা থেকে রাষ্ট্রীয় সমস্যা পর্যন্ত এখানে আলোচনা হচ্ছে।প্রশ্ন তুলছে, মতামত দিচ্ছে,গুজব রটাচ্ছে।

বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর ব্যবহার একটু ভিন্নভাবেই করছে।তারা তাদের অাদর্শ প্রচারে,জনবল তৈরি এবং একতাবদ্ধ করতে, কর্মসূচি ঘোষণা এবং প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম -ফেসবুক। মুহূর্তেই ছড়িয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ঘোষণা প্রত্যন্ত অঞ্চলের কর্মীর কাছে।এতে যেমন সুবিধা হয়েছে তেমনি তৈরি হয়েছে কিছু মানুষের অসুবিধা। 

সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাজনৈতিক ইস্যু গুলো বেশ মাথাচাড়া দিচ্ছে ফেসবুকে। রীতিমতো ফেসবুক হয়ে গেছে রাজপথ। যা বর্তমান সরকারের জন্য হুমকির কারন হয়ে দাড়িয়েছে।বলা যায় সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তখন মামলি ব্যাপার হয়ে যায়।

রাষ্ট্রযন্ত্র তখন ঘুরে দাড়ায়,বন্ধ করে দেয়া হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। মুহুর্তেই মানুষ যেন পঙ্গু হয়ে যায়। জলন্ত আগুনে যেন বর্ষণ শুরু হয়।

সরকার যখন  প্রত্যক্ষ করেন আন্দোলনের জোয়ারে ভাটা লেগেছে – তখন খুলে দেয়া হয় রাজপথ।পরিবেশ তখন শান্ত, চাপা পড়ে যায় আরেক কোনো ইস্যুর নিচে!তবুও সোসাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা সামান্যও কমছে না।এই একক জনপ্রিয়তার বিশেষ কিছু কারন রয়েছে।যেমন:

১.প্রতিনিয়ত ব্যবহারকারীর জন্য ব্যবহার সহজ করা হচ্ছে। 

২.সহজলভ্য ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। 

৩.জবাবদিহিতার প্রয়োজন হয় না।

৪.সহজ প্রচারের মাধ্যম।

৫.প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের ছায়া ইত্যাদি। 

এত জনপ্রিয় মাধ্যম হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেলে যত সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কথা,তা মুলত লক্ষ্য করা যায় না।তবে অনেক কাঠ-খর পুড়িয়ে যে একটা আন্দোলনের দানা বাধা হয়,তা চোখের নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যায়। সমাধানের দোড় গোড়ায় দাড়িয়েও চাপা পড়ে যায় রাষ্ট্রযন্ত্রের এক বোতামে।একজন সচেতন মানুষ হিসেবে,সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে,একজন সংগঠক,একজন বিপ্লবের প্রত্যাশি হিসেবে অবশ্যই এটা আমাদের গভীর উদ্যেগের বিষয় হওয়া  দরকার, ‘বিকল্প পথ কি?’- তা খুজে বের করা।

বিকল্প সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে তাকাতে হবে পিছনে, ফিরে যেতে হবে ইতিহাসে। এটুকু পাঠকের নিজ কর্তব্যের উপর ছেড়ে দিয়ে সামান্য উদাহরণ টানছি।ডাকযোগ অাবিষ্কার হওয়ার পূর্বে মানুষ কবুতর,খরগোশসহ বিভিন্ন জীবজন্তুর মাধ্যমে চিঠি-পত্র গন্তব্যে পাঠাতো,এরপর ডাকযোগ, তারপর আজকের পৃথিবী-যেখানে তথ্যের গোপনীয়তা কতটা রক্ষিত হচ্ছে তা প্রশ্নের বিষয়।

তুলে ধরছি ইতিহাস থেকে একটা কিঞ্চিৎ সফল কিন্তু দুরদর্শী বিপ্লবের ঘটনা।

মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ’র সময়কার সিপাহী বিদ্রোহের ঘটনা।ধর্মীয় অনুভূতিতে অাঘাত,মানবিক মর্যাদা লঙ্ঘন, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে শোষণ ও নিপিড়ন ছিল সিপাহী বিদ্রোহের মূল কারন।(যা বর্তমান সময়ে কতটা যুক্তিযুক্ত, তা পাঠকের বিবেচ্য)

বিদ্রোহ চলাকালে ১৮৫৭ সালের ৩১ শে মে সারা ভারতে একসাথে বিদ্রোহ,বিপ্লব ও আন্দোলনের অগ্নি স্ফূলিঙ্গ জালিয়ে দেয়া হবে- সিদ্ধান্ত নিল বিপ্লবীরা।কিন্তু সমস্যা হলো কোনোভাবে যেন এ তথ্য  কোম্পানির শাসকদের কাছে না পৌছায়।সারা ভারতের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা বিপ্লবীদের কাছে এই তথ্য পাঠানোর জন্য সৃষ্টি করা হলো এক অভিনব কৌশল-“চাপাটি রুটি”। এই রুটির ভিতরে চিঠি ঢুকিয়ে ইংরেজদের চোখে ধুলো দিয়ে সম্পূর্ণ ভারতে পৌছনো হলো সংবাদ। সুদক্ষ বৃটিশ গুপ্তচরেরা তা আচও করতে পারল না।যদিও এই বিদ্রোহে জয়লাভ করতে পারেনি তধাপি এটিই ছিল ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম-যার প্রভাব ছিল সুদুরপ্রসারী।

এখানে আমার পয়েন্ট বিদ্রোহ নয়,বরং পদ্ধতি।পদ্ধতি নির্দিষ্ট হবে কি না,তা নিয়ে দ্বিধা থাকলেও এতটুকু পরিস্কার- তা হতে হবে ব্যতিক্রম এবং যা শাসক কর্তৃক কোনোভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে না।তবেই একটা বিপ্লব সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাবে বলে আশা করা যায়। 

এটাতো গেল,উপস্থিত সময়ে সমস্যা সমাধানের পথ।এর বাহিরে সুদুর প্রসারী পরিকল্পনাও একজন বিপ্লবী নেতার থাকা আবশ্যক।যেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাহিরে অনন্য কোনো মাধ্যম তৈরি করতে হবে অথবা লোক চক্ষুর আড়ালেও সংগঠনকে সাজাতে ভিন্ন ফরমেটে। Multi Level Supervising(MLS) একটা উদাহরণ।

আন্দোলনের সফলতা নির্ভর করে,সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতার সিদ্ধান্তের সাথে- 

তথ্য নিরাপদে রেখে কতজনের কাছে পৌছাল- তার উপর।

সুতরাং সফল বিপ্লবের স্বপ্ন যারা লালন করে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের একমাত্র মাধ্যমে হতে পারে না।মুক্ত আকাশে উড়ার যাদের স্বপ্ন- ফেসবুক তাদের পথ হতে পারে না। 

ভাবুন,পরিকল্পনা করুন, সিদ্ধান্ত নিন,যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করুন- সফল বিপ্লবের পথে আরো এক পা এগিয়ে যান।

Sayeed Muhammad Sanower

Breakfast at my House

During the week we’re often walking out the door with a coffee in one hand and slice of toast in the other, but on weekends breakfast is never rushed. It’s a late affair, sometimes spilling over to lunch, with lots of reading and chatter in between courses of fruits, poached eggs, honey and toast. One of our favorite things we like to serve when friends are visiting are buckwheat blueberry pancakes.

Design a site like this with WordPress.com
Get started