মসজিদ নির্মাণ VS ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ

শেখ হাসিনা- মোদি’র রাজনীতির সরল সমীকরণ

(বাবরি মসজিদ’র পর “জ্ঞানবাপি” মসজিদের পালা)

১৫২৮-২৯ সালে অাধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী ন্যায় পরায়ন মুঘল সম্রাট বাবরের আমলে নির্মিত অযোধ্যার বিখ্যাত বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে মুসলমানদের কলিজা যে দিখন্ডিত করেছিল,তার ব্যথা কমতে না কমতেই আবার আঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে চরম উগ্রবাদী, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী,মুসলমানদের রক্ত পিপাশু বিজেপি সরকারের লেজ কাটা মানুষরূপি হায়েনার দল।

কসাই নরেন্দ্র মোদির সংসদীয় কেন্দ্র ভারতের বারাণসী( কাশী) তে ১৬৬৪ সাল থেকে গর্বের সাথে স্বমহিমায় মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে বিখ্যাত “জ্ঞানবাপি মসজিদ”। আরেক মুঘল সম্রাট হাফেজে কুরআন জিন্দপীর বাদশা আওরঙ্গজেব ওরফে বাদশা আলমগীর “জ্ঞানবাপির মসজিদ” নির্মাণ করেন।দুই গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটির মিনারের উচ্চতা প্রায় ৭২ মিটার।

জ্ঞানবাপি মসজিদ


চরম উগ্রবাদী সম্প্রদায়ের দাবী – বাদশা আওরঙ্গজেব তাদের মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ নির্মাণ করেছেন।অথচ মসজিদের গা ঘেষে এখনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সংকেত দিয়ে যাচ্ছে ” কাশী বিশ্বনাথ মন্দির”।
তাদের দাবী অনুযায়ী ১৯৯১ সালে করা পিটিশনের হিয়ারিং এ গত ৮ই এপ্রিল সরকারের গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ আদালত দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগকে নির্দেশ দেয়, তাদের দাবী খতিয়ে দেখার জন্য- মন্দিরের জায়গায় মসজিদ হয়েছে কিনা! আশ্চর্যের বিষয় হলো এই প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ (ASI) অনেক আগে থেকেই সাম্প্রদায়িক দোষে দুষ্ট,প্রশ্নবিদ্ধ।
১৯৯২ এ এদের সেই ষড়যন্ত্রের ইতিহাস আমরা আজও ভুলতে পারি নি।ভুলতে পারি অযোধ্যার মাটিতে বয়ে যাওয়া ২০০০ হাজার মর্দে মুজাহিদদের রক্তের দাগ। ১৯৯২ সালের ৬ ই ডিসেম্বর এক কালো অধ্যায় রচনা করে “বিশ্ব হিন্দু পরিষদ”। ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় প্রায় ৪০০ বছরের অধিক পুরোনো “বাবরি মসজিদ”।
আগুন জ্বলে যায় মুজাহিদদের বুকে।জিহাদের নেশায়- আল্লাহর ঘরকে জালেমদের থেকে রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে মুসলিম জনতা।চরম সাম্প্রদায়িক উগ্র হিন্দুত্বগোষ্ঠির সাথে শুরু হয় দাঙ্গা!
প্রাণ হারায়! শহিদ হয় আমার ভায়েরা! মামলা হয়- মামলা চলে দীর্ঘ প্রায় ২৮ টি বৎসর!
কিন্তু কি পেলাম❓
২০২০ এর ৩০শে সেপ্টেম্বর! মুসলমানদের সাথে খেলা হলো আরেক বঞ্চনার খেলা।নিরস্ত্র মুসলমানদের উপর যারা ঝাপিয়ে পড়ল – মুক্তি দিয়ে দেয়া হলো তাদের সবাইকে।
মুসলমানদের রক্ত পান করে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে-
বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানী!
মন্ত্রী কল্যাণ সিং!
মুরলিনোহর যোশী- সহ অভিযুক্ত ৩২ জন হায়েনা কমান্ডার❗
আদালতের দেয়া নির্দেশে সম্পুর্ণ ভেঙে ফেলা হলো বাবরি মসজিদ!
গড়ে তোলা হলো মন্দির!
রক্তের দাগ এখনো জ্বলজ্বল করছে!
শহিদদের অার্তনাদ এখনো ভাসছে!

কিন্তু এই ঘটনার ঠিক কিছুটা আংশিক বিপরীত কাজ লক্ষ্য করছি বিজেপি সরকারের দালাল আমাদের বর্তমান সরকারের।তারা মসজিদ নির্মাণ করছে! সারা দেশে সরকারি অর্থে ৫৬০ টি মসজিদ হবে!

বাংলাদেশের মডেল মসজিদ vs ভাঙা বাবরি মসজিদ

কিন্তু সচেতন মানুষের মনে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে-
সম্পুর্ণ বিপরীত ধর্মী কাজ হওয়া সত্বেও, তাদের মাঝে এ চামচামির সম্পর্ক কিভাবে টিকে অাছে⁉️

ভেবে দেখেছেন কখনো?
দাদা বাবুরে খুশি করার জন্য তো বেশি বেশি মন্দির তৈরি দরকার ছিল, তা যদি আরও হয় মসজিদ ভেঙ্গে – তাহলে তো কোনো কথাই নেই।

But it’s call রাজনীতি ❗

আমরা ইসলাম পন্থীরা ঠিক এইটাই বুঝি না- গণ মানুষের সেন্টিমেন্ট!
সেটা মানুষ মেরে হলেও!

দাদা বাবুর মন্দির নির্মাণ আর আম্মাজানের মসজিদ নির্মাণ- লক্ষ্য উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন।
সংখ্যা গরিষ্ঠের মন যোগানো।

বাংলাদেশের কিছু নামধারী “অাকবরী আমলের উত্তরসূরী” আলেম যেমন আওয়ামী লীগ সরকারকে ইসলামি সরকার ভেবে ভুল করছে, ঠিক তেমনি কিছু সহজ সরল এদেশীয়- ওদেশীয় হিন্দু ভায়েরা চরম উগ্রবাদী বিজেপি সরকার কে হিন্দুদের সরকার ভেবে ভুল করছে। তারা আসলে কারোই না,তারা ক্ষমতার লোভি।ক্ষমতার জন্য নিজের ভাইয়ের গলায় ছুড়ি চালিয়ে সেন্টিমেন্ট আদায় করবে।

এদের জনবিরোধী কাজে যেমন চুপ থাকতে নেই,তেমনি তথাকথিত জনকল্যাণমুলক কাজের ভিতরের রাজনীতি না খুজে খুশি হওয়ারও কিছু নেই।

এদের রাজনীতি বুঝতে হবে,প্রতিহত করতে হবে,প্রতিরক্ষার সুস্থিত ঢাল তৈরি করতে হবে।

হতাশার ব্যাপার হলো -“আলকুফ্ রু মিল্লাতুল ওয়াহিদা”।

আর আশার আলো হচ্ছে -“নাসরুম মিনাল্লহি ওয়া ফাতহুন কারীব,ওয়া বাশশিরিল মু’মিনিন”।

শিল্পীর হাতে আঁকা ‘জ্ঞানবাপি মসজিদ’

Sayeed Muhammad Sanower

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started